Friday, December 5, 2025
HomeScrollদিল্লিতেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শাসকের প্রাসাদে থাকবেন পুতিন!
Vladamir Putin

দিল্লিতেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শাসকের প্রাসাদে থাকবেন পুতিন!

কী আছে ১৭০ কোটির এই ঐতিহাসিক বাংলোয়?

ওয়েব ডেস্ক: ভারত (India) সফরে আসছেন রাশিয়ার (Russia) প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladamir Putin)। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে পৌঁছেই শুরু হবে তাঁর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। রাষ্ট্রনেতার নিরাপত্তায় রাজধানীকে ইতিমধ্যেই ঢেকে ফেলা হয়েছে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে। রাশিয়া থেকে আনা বিশেষ নিরাপত্তারক্ষী, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন স্ক্যানার, এআই নজরদারি, সিসিটিভি ও ড্রোন চলবে পর্যবেক্ষণ। সব মিলিয়ে পাঁচস্তরের নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে (Putin’s India Visit)।

কিন্তু দিল্লিতে আসার পর কোথায় থাকবেন পুতিন? উত্তর, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শাসক হায়দরাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলি খানের সেই কিংবদন্তি প্রাসাদ, হায়দরাবাদ হাউসে। কার বাড়ি এই হায়দরাবাদ হাউস? দিল্লির হৃদয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই প্রাসাদ তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। তখনকার বিশ্বের ধনীতম শাসক—হায়দরাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলি খান—এর স্বপ্নের বাড়ি এটি। আজ এই ভবনই ভারত সরকারের রাষ্ট্র-অতিথি ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং শক্তিধর বিশ্বনেতাদের বৈঠকের প্রধান কেন্দ্র।

আরও পড়ুন: ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চীন!

সূত্র বলছে, দিল্লিতে নামার পর পুতিনকে এখানেই আপ্যায়ন করা হবে। কেন এই বিশেষ প্রাসাদ? ইতিহাস বলছে, রাজধানী বদল জমির দাবি। ব্রিটিশরা যখন রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে আনে, তখন প্রিন্সলি স্টেটগুলিও রাজধানীতে জমি দাবি করতে শুরু করে। ব্রিটিশ ভাইসরয়েরাও এতে খুশি হয়, রাজন্যবর্গের উপস্থিতি ব্রিটিশ আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হত।

কিন্তু অন্যরা যেখানে সাধারণ জমি চাইল, হায়দরাবাদের নিজামের দাবি ছিল স্পষ্ট ভাইসরয় হাউস (বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভবন)-এর ঠিক পাশের জায়গা। ব্রিটিশরা এতে সম্মতি না দিলে, পাঁচটি প্রিন্সলি স্টেটকে কিংসওয়ের শেষের দিকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়— হায়দরাবাদ, বরোদা, পাতিয়ালা, জয়পুর ও বিকানের।

হায়দরাবাদ হাউস ও বরোদা হাউসের নকশা তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স–এর হাতে ভারতের রাজধানীর স্থাপত্যের নির্মাতা তিনিই। নিজামের নির্দেশ ছিল,বাড়িটি যেন ভাইসরয় হাউসের মতোই মহিমান্বিত হয়। সরকার অনুমতি না দিলেও লুটিয়েন্স একটি বিশাল ডোম যুক্ত করেন এবং তাঁর বিখ্যাত ‘বাটারফ্লাই প্ল্যান’ অনুযায়ী বাড়িটি নির্মিত হয়।

কী আছে ১৭০ কোটি টাকার এই বাংলোয়? অসাধারণ স্থাপত্যের ভিতরে ১৯২০-এর দশকে প্রায় ২ লক্ষ পাউন্ড ব্যয়ে তৈরি হয় এই প্রাসাদ। এর বিশেষত্ব, প্রজাপতি-আকৃতির বাটারফ্লাই শেপড বিল্ডিং ৩৬টি কক্ষ ইউরোপীয় ধাঁচের সিঁড়ি সাজানো ফোয়ারা, শীতকালের জন্য ফায়ারপ্লেস, সমৃদ্ধ মুঘল মোটিফকেন্দ্রের বিশাল গম্বুজ, ৫৫ ডিগ্রি কোণে বিস্তৃত ডানা, ইতালির প্যানথিয়ন ও ফ্লোরেন্সের উফিজি প্যালেস–এর অনুপ্রেরণায় তৈরি অভ্যন্তর, ও বিশেষভাবে মার্বেল বিছোনো রম্বিক ফ্লোর ডিজাইন প্রাসাদে ছিল আলাদা জেনানা কোয়ার্টার। ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ নিজেও এই কক্ষগুলির সৌন্দর্যের প্রশংসা করে গেছেন।

স্বাধীনতার পরে প্রিন্সলি স্টেটগুলির সংযুক্তিকরণ শুরু হয়।অপারেশন পোলো–র মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদ ভারতীয় ইউনিয়নে যুক্ত হয়। তারপর থেকেই নিজামদের উপস্থিতি কমে যায়। ১৯৭৪ সালে ভবনটির দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রককে। তারপর থেকেই এটি হয়ে ওঠে রাষ্ট্র-অতিথি ভবন (State Guest House)।

দিল্লি সফরে এলে বিশ্বের নামী রাষ্ট্রনেতারা এখানে বৈঠক করেন। তালিকায় আছেন বিল ক্লিন্টন, জর্জ বুশ, গর্ডন ব্রাউন,ভ্লাদিমির পুতিন, শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রীসহ বহু বিশ্বনেতা। ঠিকানা—১, অশোক রোড, দিল্লি। এই ঐতিহাসিক বাংলোতেই এবার বসবে ভারত–রাশিয়া শীর্ষ বৈঠক।

দেখুন আরও পড়ুন:

Read More

Latest News